অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - ইসলাম শিক্ষা - Islamic Study - আখলাক | NCTB BOOK
Please, contribute to add content into আখলাকে যামিমাহ.
Content

ঘৃণা অর্থ কাউকে অত্যধিক অপছন্দ করা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, হীন ও নীচ মনে করা। ঘৃণার আরবি প্রতিশব্দ আল বুগনু )البغض(, এর বিপরীত শব্দ الحب বা ভালোবাসা। অহংকার বশত নিজেকে বড় মনে করে অন্যকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা ও তার সাথে দুরত্ব বজায় রাখাই হলো ঘৃণা। কাউকে ঘৃণা করলে, তার কোনো কিছুই সহ্য হয় না। উভয়ের মাঝে শত্রুতা সৃষ্টি হয়।

মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। আল্লাহ তা'আলা মানুষকে মর্যাদাবান করে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, আমাদের সমাজের অনেকেই মানুষকে পেশাগত কারণে ও অর্থবিত্তের কারণে সম্মান করে বা ঘৃনা করে। আমাদের আশেপাশে লক্ষ করলেই দেখতে পাবো, অনেকে কথা-বার্তায় ও আচার-অন্তরণে অন্যের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে। যেমন, অনেকে জুতো সেলাইকারী, রিক্সাচালক, ভ্যানগাড়ি চালক, পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে অবজ্ঞা করে কথা বলে তাদেরকে উপেক্ষা করে, তারা নিকটাত্মীয় হওয়ার পরও শুধু দরিদ্র হওয়ার কারণে তাদের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে না।

কুরআন মাজিদে আল্লাহ তা'আলা মানুষকে ঘৃণা ও ঘৃণা প্রকাশক কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকতে আদেশ দিয়ে বলেন, 'হে মুমিনগণ। কোনো সম্প্রদায় যেন অপর সম্প্রদায়কে উপহাস না করে। কেননা, তারা উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। কোনো নারী যেন অন্য নারীকে বিদ্রূপ না করে। সে বিদ্রূপকারিণী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। আর তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না ও একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না' (সুরা আল-হুজুরাত, আয়াত: ১১)। ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ায় পদ-পদবি, সামাজিক পদমর্যাদাও হ্রাস বা বৃদ্ধি পায়। তাই এসব কারণে কাউকে ঘৃণা করা উচিত নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাউকে ঘৃণা করলে, পরবর্তীকালে লজ্জা পেতে হয়। চাই সে ঘৃণিত ব্যক্তি ঘৃণাকারীকে লজ্জা দিক বা ঘৃণাকারী নিজে ঘৃণিত ব্যক্তির উন্নতি দেখে লজ্জা পাক।

সমাজে ঘৃণার প্রভাব ও পরিণতি

পারস্পরিক ঘৃণা-বিদ্বেষ সমাজের একটি ভীষণ নিন্দনীয় দিক। ঘৃণার কারণে সমাজে বিভেদ তৈরি হয়, অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। বেশিরভাগ সময় অহংকারবশত মানুষ অন্যকে ঘৃণা করে। অহংকারী মানুষ নিজেকে বড় মনে করে অন্যকে হেয় করে কথা-বার্তা বলে, তাকে অপমান-অপদস্থ করে। এভাবেই সমাজে ঘৃণার প্রসার ঘটে। মানুষ যাতে নিজের উঁচু পদ-পদবি, অর্থ-বিত্ত, সামাজিক পদমর্যাদার কারণে অহংকার না করে, সে জন্য আল্লাহ তা'আলা কুর'আন মাজিদে মানুষকে তাঁর সৃষ্টি সম্পর্কে সারণ করিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহ তা'আলা বলেন, 'আমি কি তোমাদেরকে তুচ্ছ পানি থেকে সৃষ্টি করিনি?' (সুরা মুরসালাত, আয়াত: ২০)

ঘৃণার প্রসার ঘৃণাকারী ও ঘৃণিত উভয়কে কষ্ট দেয়। যাকে ঘৃণা করা হয় তিনি লজ্জিত ও অপমানিত বোধ করেন। অন্যদিকে ঘৃণাকারী অন্যকে ঘৃণা করার কারণে মানসিক অস্থিরতায় ভোগে। তার অন্তরের প্রশান্তি দূর হয়ে যায়। ঘৃণ্য কোনো কল্যাণ বয়ে আনে না বরং সৎকর্মকে ধধ্বংস করে দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, 'তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মাতের রোগ তোমাদের মাঝে সংক্রমিত হয়েছে। তা হলো হিংসা-বিদ্বেষ ও ঘৃনা। আর ঘৃনা (সৎকর্ম) ধাংস করে দেয়।' (তিরমিযি )
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরো বলেন- 

لَا تَبَاغَضُوا ، وَلَا تَحَاسَدُوا ، وَلَا تَدَابَرُوْا، وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا

وَلَا يَحِلُّ لِمُسْلِم أَن يَهْجَرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ

অর্থ: 'তোমরা পরস্পরকে ঘৃণা করো না, হিংসা করো না, ষড়যন্ত্র করো না। তোমরা পরস্পর আল্লাহর বান্দা হিসাবে ভাই ভাই হয়ে যাও। কোনো মুসলিমের জন্য বৈধ নয় যে, সে তাঁর ভাইয়ের সাথে তিন রাতের অধিক সম্পর্ক ছিন্ন করে থাকবে।' (বুখারি)

ইবলিস শয়তান অহংকারবশত হযরত আদম (আ.) এর প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেছিল। তাই আল্লাহ তা'আলা তাকে জান্নাত থেকে বিতাড়িত করেছিলেন। শয়তানের প্ররোচনায় আমরা অন্যকে অবজ্ঞা ও ঘৃণা করি। আমরা আল্লাহ তা'আলার নিকট দোয়া করব যেন, আমরা কাউকে অন্যায়ভাবে ঘৃণা না করি। কখনো ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় কারো প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করলে, তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিব।
আমাদের ভালোবাসা ও ঘৃণা হবে আল্লাহর জন্য। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, 'যে আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসে, আর আল্লাহর জন্য কাউকে ঘৃণা করে এবং আল্লাহর জন্যই দান-সদাকা করে আবার আল্লাহর জন্যই দান-সদাকা করা থেকে বিরত থাকে তাঁর ঈমান পরিপূর্ণ হলো' (আবু দাউদ)। আমরা মু'মিন ও সৎকর্মপরায়ণ মানুষকে ভালোবাসবো, তাদের সাথে ওঠাবসা করবো। যারা পাপ কাজ করে ও পাপ কাজের প্রসারে সাহায্য করে, তাদের থেকে দূরে থাকবো।

Content added By

যুলুম আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো নির্যাতন বা অত্যাচার। সাধারণ অর্থে যার যা প্রাপ্য তাকে সেই প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার নাম ফুলুম। সে হিসেবে কারো অধিকার হরণ, অশ্লীল ভাষায় গালাগাল, বিনা অপরাধে নির্যাতন, অন্যায়ভাবে কারো আর্থিক, দৈহিক, মানসিক ও মর্যাদার ক্ষতিসাধন, মানহানিকর অপবাদ দেওয়া, দুর্বলের ওপর নৃশংসতা চালানো, অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ হরণ, উৎপীড়ন বা যন্ত্রণা প্রদান করা, কারো প্রতি ন্যায়বিচার না করা, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া, অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা ইত্যাদি সবই যুলুমের পর্যায়ভুক্ত। আর যে যুলুম করে, তাকে বলা হয় জালিম।

ইসলামে যুলুম কঠোরভাবে হারাম করা হয়েছে। যুলুমকারী সবচেয়ে ঘৃণিত ও নিকৃষ্ট ব্যক্তি। হাদিসে কুদসিতে মহানবি (সা.) ঘোষণা করেন, আল্লাহ তা'আলা বলেন, 'হে আমার বান্দারা। আমি আমার নিজের জন্য যুলুম করা হারাম করে নিয়েছি এবং তোমাদের পরস্পরের মধ্যেও যুলুম হারাম করেছি। সুতরাং তোমরা একজন অন্যজনের উপর যুলুম করো না।' (মুসলিম)

যুলুম একটি সামাজিক ব্যাধি। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বত্র ব্যাপক আকার ধারণ করেছে এটি। অনোর ওপর অন্যায় বা অবিচার করে জালিমরা নিজের পতন ও ধ্বংস ডেকে আনে। যুলুমের কারণে পুরো পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। শান্তি ও সম্প্রীতি বিনষ্ট হচ্ছে। ফলে এক সময় জালিম বা অন্যায়কারীর জীবনে নেমে আসে নানা বিপদ-আপদ। রাসুল (সা.) বলেছেন, 'নিশ্চয়ই যারা মানুষকে অন্যায়ভাবে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তা'আলা তাদের শাস্তি প্রদান করবেন' (মুসলিম)। আর এ শাস্তি শুধু মুসলমান নয়, কোনো অমুসলিমের ওপর যুলুম করলেও প্রযোজ্য।

মাজলুম বা নিপীড়িতের দোয়া কখনো ব্যর্থ হয় না। তাই মাজলুমের চোখের পানি ও অন্তরের অভিশাপ জালিমের পতনের কারণ হয়। মাজলুমের আর্তনাদের ফলে আল্লাহর পক্ষ থেকে জালিমদের ওপর নেমে আসে কঠিন শাস্তি। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, 'তিন ব্যক্তির দোয়া আল্লাহর কাছ থেকে ফেরত আসে না। এক, ইফতারের সময় সিয়ামপালনকারীর দোয়া। দুই, ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া। তিন, মাজলুমের দোয়া।' (তিরমিযি)

আমাদের প্রিয় নবি (সা.) জালিমকে তার যুলুন থেকে প্রতিহত করার ব্যাপারে কঠোর তাগিদ দিয়ে বলেন, 'মানুষ যদি কোনো অত্যাচারীকে অত্যাচারে লিপ্ত দেখেও তার দু'হাত চেপে ধরে তাকে প্রতিহত না করে, তবে আল্লাহ তা'আলা শীঘ্রই তাদের সবাইকে তাঁর ব্যাপক শান্তিতে নিক্ষিপ্ত করবেন।' (তিরমিযি)। যুলুমকারী বড় হতভাগা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা কি জানো গরিব কে? সাহাবিগণ বললেন, আমাদের মধ্যে যার সম্পদ নেই সে হলো গরিব লোক। তখন তিনি বললেন, 'আমার উম্মতের মধ্যে সে হলো গরিব, যে কিয়ামতের দিন সালাত, সাওম ও যাকাত নিয়ে আসবে অথচ সে অমুককে গালি দিয়েছে, অপবাদ দিয়েছে, অন্যায়ভাবে লোকের সম্পদ যেয়েছে, রক্ত প্রবাহিত করেছে এবং কাউকে প্রহার করেছে। কাজেই এসব নির্যাতিত ব্যক্তিকে সেদিন তার নেক আমল দিয়ে দেওয়া হবে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।' (মুসলিম)

আমাদের উচিত যুলুম থেকে দূরে থাকা। কেননা জালিম যুলুম করে ঘুমিয়ে থাকলেও মাজলুম বা নির্যাতিত ব্যক্তি জেগে থাকে। সে জালিমের প্রতি অভিসম্পাত করতে থাকে। নিশ্চয়ই মাজলুমের বদদোয়ায় জালিমের জন্য ভয়াবহ পরিণতি রয়েছে। যুলুম থেকে দূরে থাকার কার্যকর উপায় হচ্ছে ক্ষমতার লোভ, লালসা, হিংসা, ধর্মীয় বিদ্বেষ, ক্রোধ থেকে আত্মসংবরণ করা, জনসেবা, ধর্মীয় সেবা, পরোপকারমূলক কাজে আত্মনিয়োগ করা, বৈধ পন্থায় উপার্জিত অর্থে পানাহার ও পোশাক-পরিচ্ছদে সন্তুষ্ট থাকা।

যুলুমের বিরুদ্ধে ইসলামের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত সব ধরনের যুলুম থেকে বিরত থাকা। সেই সাথে যুলুমের সহযোগিতা করা থেকে বেঁচে থাকা।

Content added By

অন্যের সম্পদ বা টাকা-পয়সা গোপনে নিজের হস্তগত করাকে আমরা চুরি বলি। চোরের পেশা বা কাজই চুরি করা।

চুরির কারণ

সমাজে বৈষম্য বৃদ্ধির ফলে যখন অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট হয় তখনই অভাবি-সুবিধা বঞ্চিত মানুষ ক্ষুধার তাড়নায় চুরি করে। অনেকে আবার লোভের বশবর্তী হয়ে চুরি করে। অনেক সময় সংঘবদ্ধ চক্র দরিদ্র ব্যক্তিদের আর্থিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদেরকে চুরি করতে বাধ্য করে।

চুরির পরিণাম

চুরি একটি জঘন্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ। চুরির কারণে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে নানা দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। হঠাৎ করে সম্পদ হারিয়ে, সম্পদের মালিক নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হয়। চোরের কারণে সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। শান্তিতে ঘুমাতে পারে না। সম্পদ হারনোর দুশ্চিন্তায় সবার মানসিক প্রশান্তি নষ্ট হয়ে যায়।
চোর চুরি করতে গেলে তার অপরাধ চুরির মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে না। সে অন্যান্য অপরাধে জড়িয়ে যায়। এছাড়া অপরাধীদের চক্রের সাথে তার সখ্য গড়ে ওঠে। চুরির পাশাপাশি, ডাকাতি, ছিনতাই, চোরাকারবার, অপহরণ, পাচার, মাদকাসক্তিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে যায়।

সবাই চোরকে ঘৃণা করে। তার সাথে সম্পর্ক রাখে না। চোরের পরিবারের সদস্যরাও অপমানিত ও খুণিত জীবন যাপন করে। নিকটাত্মীয় হলেও তার সাথে আত্মীয়তার পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করে। দুনিয়া ও আখিরাতে চোরকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়। কোনো মুমিন ব্যক্তি কখনো অন্যের সম্পদ চুরি করতে পারে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, 'চোর যখন চুরি করে তখন সে ঈমানদার থাকে না'। (বুখারি)

চুরি করা হারাম। কোনো ব্যক্তি চুরি করাকে হালাল মনে করলে সে কাফির হয়ে যাবে।

চুরির প্রতিরোধে ইসলামের ভূমিকা

১. ইসলামি অনুশাসন মেনে চলা
প্রত্যেক মুসলমানের ওপর অপর মুসলমানের রক্ত, সম্পদ ও সম্মানে হস্তক্ষেপ করা নিষেধ। আমরা কখনো অন্যের কোনো বস্তু ছোটো হোক বা বড় হোক, না বলে নিব না। কারণ ছোটো কিছু একবার চুরি করলে শয়তান অন্য কিছু চুরি করতে প্ররোচিত করে। আমরা যা কিছু করি আল্লাহ সবকিছু জানেন, এই বিশ্বাস চর্চা করতে হবে 

২. সমাজে সাস্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা

ইসলাম দরিদ্র ও অভাবগ্রস্তদেরকে যাকাত প্রদানের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সাম্য ও সমতা প্রতিষ্ঠার আদেশ দিয়েছে। বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। আশ্রয়হীন মানুষদের পুনর্বাসন করার চেষ্টা করতে হবে। কোনো এলাকায় অর্থনৈতিক সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে চুরির মতো অপরাধ হ্রাস পায়।

৩. সচেতনতা বৃদ্ধি

অনেক সময় আমাদের সম্পদ যথাযথ সংরক্ষণ না করার ফলে চোর চুরি করে। আমাদের উচিত নিজের মালিকানাধীন সম্পদ যথাযথ সংরক্ষণ করা। সামর্থ্য থাকলে আমরা চুরি প্রতিরোধ করার জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা নিতে পারি। ইসলামে চুরির মাল ক্রয় নিষিদ্ধ। তাই কখনো যদি সন্দেহ হয় যে এটি চুরি করা ভব্য তাহলে আমরা সেটি ক্রয় করা থেকে বিরত থাকবো।

৪. দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি

ক্ষুধার যন্ত্রণা না থাকলে, অভ্যাসগতভাবে কেউ চুরি করলে তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। একজন শাস্তি পেলে অন্যরা শাস্তির ভয়ে চুরি করা থেকে বিরত থাকবে। আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন-

والسَّارِقُ وَالسَّارِقَةُ فَاقْطَعُوا أَيْدِيَهُمَا جَزَاءً بِمَا كَسَبَا نَكَالًا مِّنَ اللَّهِ

وَاللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ 

অর্থ: 'পুরুষ চোর আর নারী চোর, তাদের হাত কেটে দাও। এটি তাদের কৃতকর্মের ফল, আল্লাহর পক্ষ থেকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে। আর অল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।' (সূরা আল মায়িদা, আয়াত: ৩৮)

তবে মনে রাখতে হবে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। চোরকে অনেক সময় গণপিটুনি দেওয়া হয় যেটা ইসলামে নিষিদ্ধ। কারণ এভাবে অনেক সময় নিরপরাধ মানুষ সন্দেহের বশবর্তী হয়ে শান্তি পায়। গণপিটুনিতে অনেকের মৃত্যু হয়ে যায়। বিচারক সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে শাস্তি দিবেন।

তবে কোনো অবস্থাতেই প্রমাণিত অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া থেকে বিরত রাখা জায়েয হবে না। হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, 'মাথঘুম গোত্রের এক নারী চুরি করলে, মহানবি (সা.)-এর প্রিয় পালকপুত্র উসামা বিন যায়িদ (রা.) মহানবি (সা.) এর সাথে তার ব্যাপারে কথা বললেন। মহানবি (সা.) উসামা (রা.)-কে বললেন, 'তুমি কি আল্লাহর নির্ধারিত সীমালঙ্ঘনকারিণীর শাস্তি মওকুফের সুপারিশ করছ?' অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সা.) দাঁড়িয়ে খুতবায় বললেন, 'নিশ্চয়ই তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিসমূহকে এ কাজই ধধ্বংস করেছে যে, যখন তাদের মধ্যে কোনো সম্মানিত লোক চুরি করত, তখন তারা তাকে বিনা সাজায় ছেড়ে দিত। অন্যদিকে যখন কোনো দুর্বল লোক চুরি করত, তখন তার ওপর শাস্তি প্রয়োগ করত। আল্লাহর কসম, যদি মুহাম্মাদ (সা.) এর কন্যা ফাতিমাও চুরি করত, তাহলে আমি অবশ্যই তাঁর হাত কেটে দিতাম।' (বুখারি)

ইসলাম অর্থনৈতিক সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বারোপ করেছে, যাতে অভাবের তাড়নায় কেউ চুরি না করে। উমর (রা.) রাতের আঁধারে ছদ্মবেশে নাগরিকদের খোঁজখবর নিতেন, প্রয়োজনে তাদের ঘরে খাবার পৌঁছে দিতেন। একইভাবে ক্ষুধার তাড়নায় কেউ চুরি করলে তার হাত কাটা যাবে না। কোনো এলাকায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিলেও চুরির শাস্তি হিসাবে হাত কাটা যাবে না। কারণ তখন এমন অনেকেই চুরি করতে পারে, যে আসলে স্বভাবগতভাবে চোর নয়। আমাদের উচিৎ নিজে সচেতন হওয়া অন্যকে সচেতন করা।

প্রতিফলন ডায়েরি লিখন
'আখলাকে যামিমাহ বর্জন করে আমি নিজেকে পরিশুদ্ধ রাখি'
উল্লিখিত শিরোনামের আলোকে তুমি তোমার দৈনন্দিন জীবনে (পরিবার, বিদ্যালয়) আখলাকে যামিমাহ থেকে কীভাবে নিজেকে দূরে রাখো/রাখবে তা প্রতিফলন ডায়েরিতে লিখে আনবে। এক্ষেত্রে পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য, সহপাঠী, শিক্ষকের সহায়তা নিতে পারো।

 

Content added By

প্রিয় শিক্ষার্থী! তোমরা দেখে থাকবে তোমাদের কতিপয় বন্ধুরা কথায় কথায় শপথ করে বলে আল্লাহর কসম আমি এটা করিনি, ওটা করিনি। এ রকম শপথ যদি মিথ্যা হয় তাহলে তা মারাত্মক গুণাহের কাজ। তাহলে এর মাধ্যমে মূলত আল্লাহকে সামনে রেখে মিথ্যা বলা হলো।

আবার দেখবে অনেকে বিদ্যার শপথ করে, মায়ের শপথ করে। এগুলোও চরম অন্যায়। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে শপথ করা যাবে না। দেখা যায় অনেকেই কুরআন ছুঁয়ে, মাথা ছুঁয়ে বা কারো নামে শপথ করে। ইসলামি বিধান মতে এগুলো শিরক ও সবচেয়ে বড় গুনাহ। মহানবি (সা.) বলেন,

مَنْ حَلَفَ بِشَيْءٍ دُونَ اللَّهِ فَقَدْ أَشْرَكَ

অর্ক 'যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে শপথ করে, সে অবশ্যই শিরক করল।' (তিরমিযি)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, 'যে ব্যক্তি মিথ্যা শপথ করার মাধ্যমে কোনো মুসলমানের সম্পদ আত্মসাৎ করে, সে নিজের জন্য জাহান্নাম অবধারিত ও জান্নাত হারাম করে ফেলে।' এক ব্যক্তি বলল, 'হে আল্লাহর রাসুল। যদি তা নগণ্য জিনিস হয় তবুও?' তিনি বললেন, 'যদি একটা গাছের ডালও হয় তবুও।' (মুসলিম)

ইসলামে মিথ্যা শপথ করা বা কসম করে মানুষকে ধোঁকা দেওয়া কবিরা গুনাহ বা বড় পাপের অন্তর্ভুক্ত। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, 'কবিরা গুনাহগুলো হচ্ছে, আল্লাহ তা'আলার সাথে কাউকে শরিক করা, মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া, অবৈধভাবে কাউকে হত্যা করা এবং মিথ্যা শপথ করা।' (বুখারি)
বাজারে অনেক দোকানদার পণ্য বিক্রয়ের জন্য শপথ করে বলে আল্লাহর কসম বিশ্বাস করেন এটা আমার এত দামে কেনা। এক্ষেত্রে যদি মিথ্যা শপথ করে অর্থাৎ পণ্যের দাম বাড়িয়ে শপথ করে বলে তবে কিয়ামতের দিন তার ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে।

মানুষকে ঠকানোর জন্য যে শপথ করা হয়, তার পরিণাম ভয়াবহ। এমনকি হাদিস অনুযায়ী সে সব শপথকারীর জন্য জাহান্নাম অবধারিত হয়ে যায় এবং জান্নাত হারাম করে দেওয়া হয়। সে হিসেবে সরকারি-বেসরকারি বড় পদ পেয়ে যারা শপথ পাঠ করেন, তাদেরকে সবসময় সাবধান থাকা খুব জরুরি, যাতে শপথের বিপরীত কিছু না হয়ে যায়। রাসুল (সা.) বলেন, 'কেউ (মিথ্যা) শপথের মাধ্যমে কোনো মুসলিমের অধিকার হরণ করলে আল্লাহ তা'আলা তার জন্য জাহান্নাম অবধারিত করে দেন এবং তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন।' (মুসলিম)

আমাদের উচিত মিথ্যা শপথ করা থেকে বেঁচে থাকা। স্মরণ রাখতে হবে, অহেতুক শপথ করা ইসলাম সমর্থন করে না। আর মিথ্যা শপথ করাতো ইসলামে আরো কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। সত্য বিষয়ে দৃঢ়তা প্রকাশের জন্য আল্লাহর নামে শপথ করা যেতে পারে।

 

Content added By

প্রিয় শিক্ষার্থী, তোমরা নিশ্চয়ই এই বিখ্যাত উক্তিটি শুনেছ- ‘পরিশ্রমে ধন আনে পুণ্যে আনে সুখ, অলসতায় দরিদ্রতা পাপে আনে দুঃখ’বলা হয়। আল্লাহ তা'আলা কোনো সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ না তারা নিজ অবস্থা নিজে পরিবর্তন করে।

পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। পরিশ্রমী ব্যক্তি জীবনে সফল হয়। মানুষ তাই পায়, যার জন্য সে প্রচেষ্টা চালায়। অপরদিকে অলস ব্যক্তি জীবনে পরিবর্তন লাভ করতে পারে না। অলস ব্যক্তিনের দুইটি পন্থা-একটি হলো এটি পারবো না, অপরটি হলো ওটি দরকার নেই। যারা অলস, তাদের দিনশেষে অনেক ভোগান্তিও ভোগ করতে হয়।

অলসতা মুনাফিকদের আচরণ। মুনাফিকরা যখন সালাতে দণ্ডায়মান হয় তখন অলসতা করে। সময়মত সালাত আদায় করে না। সালাতের আরকান আহকাম ঠিকমত পালন করে না। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, 'তাদের অর্থ সাহায্য গ্রহণ করা নিষেধ করা হয়েছে এইজন্য যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে অস্বীকার করে, সালাতে শৈথিল্যের সাথে উপস্থিত হয় এবং অনিচ্ছাকৃতভাবে অর্থ সাহায্য করে।' (সূরা আত-তাওবা, আয়াত: ৫৪)"

আলসেমি নিজের ও সমাজের অবক্ষয় ডেকে আনে। অলসতা একটি জাতির উন্নতির পথে হুমকিস্বরূপ। অলসতা মানুষের শিরাগুলো এমন ভাবে খেয়ে ফেলে যেভাবে লোহাকে মরিচা খেয়ে নেয়। চিকিৎসা শাস্ত্রমতে অলসতা কোষ্ঠকাঠিন্যের একটি বড় কারণ। ফুসফুসে নিয়মিত কর্মব্যস্ততা না থাকলে তা দুর্বল হয়ে পড়ে। অলস ব্যক্তি সহজেই দম হারিয়ে ফেলে। নিজেকে অলস বানিয়ে রাখলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়তে শুরু করে।

অলসতা মানে নিষ্ক্রিয় থাকা, কাজ থেকে দূরে পালিয়ে বেড়ানো। এভাবে কাজ ফেলে রেখে দিলে পরবর্তীকালে অল্প সময়ে অনেক কাজ একসাথে করতে হয়। এতে কোনো কাজেরই গুণগতমান ভালো হয় না। আবার অনেক কাজই শেষ পর্যন্ত করা হয়েই উঠে না।

যে ব্যক্তি অলসতায় আচ্ছন্ন, সে কাজের প্রতি মনোনিবেশ করতে পারে না। বড় কোনো কিছু অর্জন করতে গেলে ছোট ছোট লক্ষ্য অর্জন করেই সামনে এগিয়ে যেতে হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজেকে ভালোবাসা, নিজের কাজকে ভালোবাসা, নিজের অলসতা দূর করার জন্য নিজেই নিজেকে অনুপ্রাণিত করা।

অলসতা কাটানোর আরেকটি শক্তিশালী উপায় হলো, সফল ব্যক্তিদের জীবন থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া। পৃথিবীর সফল মানুষগুলো তাদের জীবনে কঠোর পরিশ্রম করেই সফল হয়েছেন। তাই অলসতা দূর করার জন্য সফল ব্যক্তিদের জীবন কাহিনী পড়তে হবে, জানতে হবে। তাদের অনুসরণ করতে হবে। এই অনুপ্রেরণা তোমার আশেপাশের মানুষ বা তোমার প্রিয়জনের কাছ থেকেও আসতে পারে।
অলসতা কাজের ব্যাঘাত ঘটায়, শরীর ও মনে বিরূপ প্রভাব পেলে। ফলে মানুষ বিষণ্ণবোধ করে। তাছাড়া অলস মানুষ সমাজ-সংসারের কাছে অনেক বিদ্রুপের শিকার হয়। এসব থেকে বাঁচতে হলে পরিশ্রমী হতে হবে।

দলগত কাজ
শিক্ষার্থীরা তাদের দেখা অলস ব্যক্তিদের ব্যর্থতার চিত্র উল্লেখপূর্বক নিজেদের/পরিবারের সদস্যদের জীবনে পরিশ্রমের ফলে সফলতার গল্প উপস্থাপন করবে।

 

Content added || updated By

সুদ আধুনিক অর্থ ব্যবস্থার এক মারাত্মক অভিশাপ। এটি ধনীকে আরো ধনী আর গরিবকে আরো গরিব বানিয়ে দেয়। ইসলামে এটি হারাম।

সুদ এর আরবি প্রতিশব্দ রিবা । ঋণদাতা কর্তৃক ঋণগ্রহীতা থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করাকে সুদ বলে। সুদের পরিচয় দিয়ে মহানবি (সা.) বলেছেন-

كُلُّ قَرْضٍ جَرَّ نَفْعًا فَهُوَ رِبًا

অর্থ: 'যে ঋণ কোনো লাভ নিয়ে আসে তাই রিবা বা সুদ।' (জামে সগির)

সুদের লেনদেন দু'ভাবে হতে পারে। টাকার মাধ্যমে এবং পণ্যদ্রব্যের মাধ্যমে। উভয় প্রকারের লেনদেনে সময়ের বিনিময়ে অতিরিক্ত গ্রহণ করাকে সুদ বলে। রাসুল (সা.) হাদিসে হয় প্রকারের পণ্যের নাম উল্লেখ করে বলেন- এগুলো সমান সমান নগদে নগদে বিক্রি করায় কোনো সুদ নেই, যদি কেউ আদান প্রদানে বেশি দেয় অথবা বেশি নেয় তাহলে তারা উভয়ে সুদের লেনদেন করল। গ্রহীতা এবং প্রদানকারী এক্ষেত্রে সমান।

সুদ হচ্ছে একটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি। এটি সমাজকে কলুষিত করে ঝগড়া ও বিদ্বেষ ছড়ানোর মাধ্যমে। অপরদিকে সুদের বিপরীত হচ্ছে হালাল ব্যবসা, যা সমাজে শান্তি আনে। ক্রেতা বিক্রেতার মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও ভালোবাসা বৃদ্ধি করে। তারা উভয়েই লাভবান হয়। আল্লাহ তা'আলা ব্যবসাকে হালাল করেছেন অপরদিকে সুদকে হারাম করেছেন। কুরআনের বাণী-

ذلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرَّبُوا وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرَّبُوا

অর্থ: এটা এজন্য যে তারা বলে, ক্রয়-বিক্রয় তো সুদের মতো। অথচ আল্লাহ তা'আলা ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল ও সুদকে হারাম করেছেন। (সূরা আল বাকারা, আয়াত: ২৭৫)

মহানবি (সা.) সুদদাতা, গ্রহীতা, সাক্ষ্যদাতা, লেখক ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিশপ্ত ঘোষণা করেছেন। হাদিসে এসেছে-

لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَكِلَ الرِّبَا، وَمُوْكِلَهُ

وَكَاتِبَهُ، وَشَاهِدَيْهِ، وَقَالَ هُمْ سَوَاءٌ

অর্থ: 'রাসুল (সা.) সুদদাতা, গ্রহীতা, সুদ-চুক্তির লেখক ও সাক্ষীদ্বয়কে অভিশাপ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তারা সবাই সমান অপরাধী।' (মুসলিম)

সুদী কারবার বান্দাকে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ করে। আল্লাহ তা'আলা সুদ গ্রহীতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষনা দিয়েছেন। রাজাধিরাজ আল্লাহর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হলে পরাজয় সুনিশ্চিত।

সুদখোর যাবতীয় কল্যান থেকে বঞ্চিত হয়। সুদ খেলে অন্তর কঠোর হয় এবং তাতে মরিচা পড়ে। সুদখোরের দোয়া ও ইবাদাত কবুল হয় না। আল্লাহ তা'আলা সুদের অর্থ দিয়ে সাদাকা করলে সেটা গ্রহণ করেন না। মহানবি (সা.) বলেছেন, 'আল্লাহ তা'আলা পবিত্র তিনি শুধু পবিত্র মালই গ্রহণ করেন।'
সর্বশেষ নাযিল হওয়া আয়াত হলো আয়াতুর রিবা বা সুদ বিষয়ক আয়াত। এতে বুঝা যায়, আল্লাহ তা'আলা চূড়ান্তভাবে সুদকে হারাম করেছেন। আয়াতটি হলো-

يَأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَذَرُوا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبوا

إِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِينَ 

অর্থ: 'হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যা অবশিষ্ট আছে, তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা মুমিন হও।' (সুরা আল বাকারা, আয়াত: ২৭৮)।

এ ছাড়াও সুদের অনেক ক্ষতি রয়েছে যা গণনা করে শেষ করা যাবে না। তবে আমাদের জন্য এতটুকু মনে রাখাই যথেষ্ট যে, আল্লাহ তা'আলা সেটাই হারাম করেন যার মধ্যে অনিষ্ট ও অকল্যাণ রয়েছে। যার বাহ্যিক লাভের চেয়ে চূড়ান্তভাবে ক্ষতিই বেশি। তাই আমরা সুদ থেকে বেঁচে থাকব।

শিক্ষকের নির্দেশনা মোতাবেক তুমি/তোমরা একটি তালিকা তৈরি করো।

আখলাকে যামিমাহ

বর্জন করি

বর্জন করবো

অভিভাবকের ন্যামত/পরামর্শ

চুরিঅন্যের লেখা নিজের নামে প্রচার করি না।বিদ্যালয়ে, চলার পথে কারো কোনো বস্তু পড়ে থাকলে সেটি নিবো না।অসেচতনতাভাবে কারো কোনো বন্ধু নিজের কাছে চলে আসলে মালিকের কাছে পৌঁছে দিতে হবে
যুলুম   
সুদ   

 

Content added || updated By

আরও দেখুন...

Promotion